নারায়ণগঞ্জ বন্দরে দাবিকৃত ২ লাখ টাকা যৌতুক দিতে ব্যর্থ হওয়ার জের ধরে পাষান্ড স্বামীর দেওয়া আগুনে সুমাইয়া আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূ অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ মা মাহামুদা বেগম বাদী হয়ে সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে পাষন্ড স্বামী শাওন ও যৌতুক লোভী শাশুড়ি সেলিনা বেগমসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে গত ২১ জুলাই রাত ১টায় বন্দর উপজেলার তিনগাও এলাকায় এ অগ্নিদগ্ধের ঘটনাটি ঘটে। অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের দেউলী চৌরাপাড়া এলাকার জয়নাল উদ্দিনের মেয়ে।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ মাস পূর্বে বন্দর থানার ২৪নং ওয়ার্ডের জয়নাল উদ্দিন মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের সাথে বন্দর উপজেলার তিনগাও এলাকার সেলিনা বেগমের ছেলে শাওনের সাথে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ২নং বিবাদী যৌতুক লোভী শাশুড়ির পরামর্শে পাষন্ড স্বামী শাওন ও একই এলাকার সজিব মিয়ার স্ত্রী লাখি বেগম যৌতুকের জন্য গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তারকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ সুমাইয়া যৌতুকের বিষয়টি তার মাকে জানালে তার মা মাহমুদা বেগম মেয়েরে সুখের কথা চিন্তা করে যৌতুক লোভী পরিবারকে নগদ ১ লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ জুলাই রাত ১টায় যৌতুক লোভী স্বামী শাওন পুণরায় গৃহবধূর কাছে আরো ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ঐ সময় ১নং বিবাদী শাওন ও ৩নং বিবাদী লাখি বেগম উল্লেখিত গৃহবধূকে এলোপাথারী ভাবে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। ঐ সময় ১নং বিবাদী যৌতুক লোভী পাষন্ড স্বামী শাওন হত্যার উদ্দেশ্যে বাদিনীর মেয়ের দেহে কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। পরে গৃহবধূর চিৎকারের শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে গৃহবধূ সুমাইয়াকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে অভিযোগের বাদিনী মাহামুদা বেগম জানান, অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমার মেয়ের দেহ ৮০% পুড়ে গেছে। আমি যৌতুক লোভীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু বকর সিদ্দিক জানান, অভিযোগটি হাতে পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।