বিবিবি প্রেস ঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রথম আলোর কয়েক দফায় শ্রেষ্ঠ ঘোষিত সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির এর পিতার ১ম মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (ডিসেম্বর ২০২১ ইং) সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনিরের নিজ বাসভবন সোনারগাঁ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড এ আয়োজন করা হয়। মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কোরআন খতম ও মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং এলাকার একাধিক মাদরাসা ও এতিম খানায় এতিমদের মাঝে খাবার বিতরন করা হয়। এসময় সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির তাঁর পিতার স্বরণে তিনি বলেন,
আজ ৯ ডিসেম্বর। আজ আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের দিন। আজ আমার পৃথিবী বদলে যাওয়ার দিন। এই দিনে আমি আমার আব্বাকে হারিয়েছি। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রাতে আব্বা ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে মহান আল্লাহ’র ইচ্ছায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাদের মা, চার ভাই-বোনকে এতিম করে পৃথিবী ছেড়ে পরকালে চলে যান। আব্বাকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখন বুঝি কেউ আব্বার মতো নিঃস্বার্থ ভালোবাসে না। সবার ভালোবাসার ভনিতার মাঝে স্বার্থ কাজ করে। সবাই ভালোবাসার অভিনয় করে বিনিময়ে কিছু নিতে চায়।
আমার আব্বা খুব আবেগী ছিলেন। বড় সন্তান হিসেবে খুব আদর করতেন। আব্বার মৃত্যুর পর এমন কোনো শান্তনার বাণী নেই, যা শুনিয়ে আমার বুকের মাঝে পাথর চাপা কষ্টগুলোকে কমনো যাবে। আব্বা নেই আমার বটবৃক্ষ নেই, এখন গ্রীষ্মের দাবদাহে আমার গা পুড়ে ছাড়খার হবে। কেউ আর বটবৃক্ষের ছায়া দিয়ে আমার পাশে দাঁড়াবে না।
এক বছর ধরে আমি আব্বার ছায়া পাই না। তিনি চলে যাওয়ার পর শিখেছি অনেক বাস্তবতা, দেখেছি অনেক নিষ্ঠুরতা। মনে পড়ে আব্বার পরিশ্রমী হাতের স্পর্শ, তার সততা, ন্যায়নীতি পরায়নতা। মনে পড়ে রাত ৩টায় আব্বার ঘুম থেকে জেগে আমাদের সনমান্দি গ্রামের মসজিদে যেতেন। প্রথমে কোরআন পড়তেন, জিকির করতেন, তাহাজ্জতের সালাত আদায় করতেন, পরে ফজরের আযান দিতেন। আব্বা আমাদের মসজিদে প্রতি ওয়াক্তের নামাযের আযান দিতেন, গজল গাইতেন।
আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখেছি তিনি আমাদের জন্য রোদ বৃষ্টি ঝড় উপেক্ষা করে ফসলি জমিতে কত পরিশ্রম করতেন। আব্বা আজ আপনাকে ছাড়া আমরা যে কি অসহায় তা বুঝতে ভুল হয় না একটি বার। হে মহান আল্লাহ আপনি আমার আব্বার সব পাপ মাফ করে দেন। কবরের আজাব মাফ করে দেন। তার রুহের শান্তি দেন। তাকে জান্নাতবাসী করুন। আব্বা যেখানে শুয়ে আছেন সেই সনমান্দি কবরস্থানকে আপনি জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিন – আমিন।