নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দরে সোনাকান্দা সরকারি খাল উদ্ধার ও ওয়াক-ওয়ে নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে। সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে বন্দরে শুরু হয়েছে ব্যাপক তোলপাড়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকেরা সকাল হওয়ার আগেই সরাতে শুরু করেছে ব্যবহৃত হওয়া নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। এমনকি উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে নিম্নমানের ব্লকগুলো। তবে বন্ধ রয়েছে অন্যান্য নির্মাণ কাজ। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এদিকে বন্দরের বিভিন্ন সরকারি খাল উদ্ধার ও ওয়াক-ওয়ে নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পুকুর চুরির মতো অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। এসব দুর্নীতিগ্রস্থ ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি খাল উদ্ধার এবং ওয়াক ওয়ে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেলছে নিকটস্থ বাড়ির বাসিন্দাদের। এছাড়া সরকারের কয়েক কোটি টাকা গচ্ছা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের প্রতিবাদের মুখে খালের কিছু অংশের ডাস্ট ও ব্যবহার অযোগ্য মাটি সরিয়ে ফেলা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে খুবই নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। শুরু থেকে এসব অনিয়ম চলে আসলেও রহস্যজনক কারণে নাসিক’র দায়িত্বশীল কাউকে তদারকি করতে দেখা যায়নি। এমনকি নুন্যতম ব্যবস্থা গ্রহণের নজির নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলী আজগর হোসেন বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে কিছুটা শুনেছি। তবে এটা আমার এরিয়া না। প্রকৌশলী ইসমাইল সাহেবের এরিয়া। এ বিষয়ে তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
নাসিক ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেনশাহ আহম্মেদ জানান, সোনাকান্দা হাঁট থেকে মাহমুদ নগর খাল উদ্ধার ও ওয়াক ওয়ে নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের কারণে তাদের টনক নড়েছে। ভোর বেলায় বেশ কিছু নিম্নমানের ব্লক উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। ব্যবহার অযোগ্য কিছু মাটি, বালু ও নিম্নমানের ইট, সিমেন্ট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। প্রভাবশালীদের দখলে থাকা সিটি কর্পোরেশনের খালের জমি উদ্ধারের দাবী করে শাহেন শাহ বলেন, সঠিক নকশা এবং বিধিমতে উন্নয়ন কাজ করতে হবে। নিয়মবহির্ভূত কাজের কারণে নিরীহ মানুষের যেনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। চলমান নির্মাণ কাজের যথাযথ তদারকি করতে হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতি ও অনিয়মের কারণে চরম ঝুঁকিতে পড়তে পারে শতাধিক বাড়ির বাসিন্দারা।নগরবাসীর জন্য অবকাঠামোগত সৌন্দর্য বর্ধন করতে গিয়ে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছি কিনা সেটাও ভেবে দেখতে হবে।
গত নির্বাচনের আগে সরকারি খাল উদ্ধারের কাজ শুরু করে সিটি কর্পোরেশন, যা এখনো চলমান রয়েছে। করোনাকালীন এসব উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকার পরে কয়েকমাস যাবত পূণরায় চালু করা হয়। নবীগঞ্জের মাসুম ও এলিন সহ ৬ জন চলমান নির্মাণ কাজের ঠিকাদার।