আনিছুর রহমান,সোনারগাঁ থেকে ঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে ফসলী ও নদের জায়গা ভরাট করে দখলের অভিযোগ উঠেছে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ও স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকা বাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদে তিন বছর ধরে সরকারিভাবে খননের কাজ চলছে। সোনারগাঁয়ের শম্ভুপুরা থেকে শুরু করে জামপুর ইউনিয়নের কলতাপাড়া পর্যন্ত নদের নাব্যতা দূর করতে এ খননকাজ চলছে। ইতিমধ্যে খননকাজের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ খননকাজ চলার সময়ই সোনারগাঁয়ের সনমান্দি ইউনিয়নের ঈমানেরকান্দি এলাকায় নদে কয়েকটি আনলোড ড্রেজার ও খননযন্ত্রের সাহায্যে বালু ফেলে দখল করা হচ্ছে। প্রায় মাসখানেক দিন ধরে ব্রহ্মপুত্র নদে এ দখলবাজি চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান করার জন্য স্থানীয় ঈমানেরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মতিনের নেতৃত্বে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি একত্র হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ ঘেসে বালু ফেলে ভরাট করে দখল করে নিচ্ছেন। স্থানীয় পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ দখল বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেও তাঁরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি শক্তিশালী ড্রেজারের সাহায্যে বালু ফেলে ফসলী জমি ও নদ দখল করা হচ্ছে। আবদুল মতিন ও তাঁর সহযোগীরা খননযন্ত্রে বসে নদ ভরাটকাজের তদারকি করছেন। অভিযোগ রয়েছে কিছু বিশেষ পেশার লোক এ কাজের সাথে জরিত থাকায় এই অবৈধ কাজ বন্ধ হচ্ছে না। একদিকে চলছে নদের খননকাজ, অন্যদিকে সরকারি অর্থায়নে খনন করা নদের জায়গা দিনদুপুরে চর দখলের মতো দখল করে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসককে লিখিত ও মৌখিকভাবে অবগত করা হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। ব্রহ্মপুত্র নদের দখলবাজি বন্ধ না হলে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করার হুমকি দিয়েছে।’ তবে ফসলী জমি ও নদ দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল মতিন বলেন, এলাকার ফসলী জমি ও ব্রহ্মপুত্র নদ দখলের সঙ্গে আমরা জড়িত নই, আপনারা সরেজমেিন এসে দেখেন। ওই গ্রামের কয়েক জন বাসিন্দা জানান, জোর করে কয়েক বিঘা ফসলি জমি বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলে। আমরা প্রতিবাদ করলে ওই ভূমিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, সরকারী সম্পতি রক্ষার্থে সরকারের একা দায়িত্বে নয় । ফসলী জমি ও নদী রক্ষার্থে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। উন্নয়নের নামে যেন ফসলী জমি ও নদী দখল না হয়।
এব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তাফা মুন্নার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘ব্রহ্মপুত্র নদ দখল করার বিষয়টি জানতে পেরেছি । তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।