নিত্যদিন ভোরের আলো সোনা রোদ হয়ে ঝলমলিয়ে হাসে। নীল আকাশে এক ঝাঁক উরন্ত পাখিরা হাসে। ফুল গাছে, হাসে ফুলেরা। রাতের আকাশের তারারা হাসে। হাসে জ্যোৎস্না রাতের চাঁদ। প্রকৃতি সুন্দর তার এই নির্মল হাসিতেই। আপনি সুন্দর আপনার মিষ্টি হাসিতে। হাসি হল মানুষের জীবনে একটি টনিকের মত। হাসি জীবনকে সহজ করে। জীবনটা উপভোগ করতে হয় প্রতিদিন, প্রতি মুহুর্তে, প্রতিটি ছোট্ট ছোট্ট স্মৃতিতে। যত বেশি হাসবেন ততো বেশি আপনার জীবনটা ভরে যাবে আনন্দ ও পরিতৃপ্তিতে।
তাই হাসির গুরুত্ব বোঝাতে মার্টিন লুথার বলেছেন- “স্বর্গে হাসির অনুমতি না থাকলে আমি স্বর্গেও যেতে চাই না।”
একটি নির্মল হাসি আপনার জন্য একটি মহৌষধ। হাসির মাধ্যমে আপনি নিজের অজান্তেই সারিয়ে ফেলতে পারেন দেহে বাসা বাধা অনেক জটিল রোগ। দেখে নিন হাসির নানান ধরনের বেনিফিটস:
(১) হার্টের সমস্যা
আপনার হার্টের ভালোর জন্য হাসিটা খুব জরুরী। গবেষণায় দেখা যায় যে সকল মানুষ বেশি হাসে তাদের হার্টের সমস্যা তুলনামূলক ভাবে খুব কম থাকে। তাই সুস্থ হার্টের জন্য মন খুলে হাসুন।
(২) রাগ কমায়
হাসি সম্পর্কের মালা গাঁথা। একে অপরের দূরত্ব ঘোচাতে একটি সুন্দর হাসিই যথেষ্ট। হাসি অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করে। কঠিন পরিস্থিতে রাগ কমায়।
(৩) কাজের উৎসাহ
কর্মক্ষেত্রে সঠিকভাবে কাজ করতে চাই প্রফুল্ল মন। দলবদ্ধভাবে বা একা যেভাবেই কাজ করুন না কেন কাজের উৎসাহ ধরে রাখতে ও মানসিক দৃঢ়তা আনতে হাসি খুশি থাকাটা অত্যন্ত জরুরী কিন্তু!
(৪) মেন্টাল প্রেশার
মেন্টাল প্রেশারে কে নেই বলুন তো? এটাতো নিত্যদিনের সঙ্গি-তে পরিণত হয়েছে। এই মেন্টাল প্রেশার বা মানসিক চাপ বেসিক্যালি হাজার ধরনের রোগের স্রষ্টা। মানসিকভাবে চাপের উপর থাকলে যে কারো জীবনই গতি হারিয়ে ফেলে। বেঁচে থাকার কোন অর্থই সে খুঁজে পায় না। এমন মৃত জীবন থেকে বাঁচতে তাই হাসুন প্রতিদিন।
(৫) ব্যথা সারাতে
অট্ট হাসিতেই ব্যথা দূর হতে পারে। দেহের যেকোন ব্যথা সারাতে হাসুন। কারণ, হাসলে আমাদের মস্তিষ্কে এনডোরফিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে যা দেহের ব্যথা দূর করে।
(৬) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
হাসি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হাসির সময় দেহের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। যার ফলে অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রা বেড়ে যায় । রক্তে এড্রেনালিনের পরিমাণ কমে যায় যার ফলে সর্দি, কাশি, জ্বর এবং অন্যান্য ছোট ছোট রোগ আক্রান্ত করতে পারে না।
(৭) হাই ব্লাড প্রেশারে
হাই ব্লাড প্রেশারে হাসি ঔষধের মত কাজ করে। প্রেশারকে স্টেবলড কন্ডিশনে রাখে এবং সুস্থতা নিশ্চিত করে।
(৮) ঘুম হতে সাহায্য করে
শরীর সুস্থ থাকতে চাই ভালো ঘুম। হাসি ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। জাপানে একটি গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে সন্ধ্যায় যত বেশি হাসবেন, রাতে তত ভালো ঘুম হবে! খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার। এই জন্য ঘুমাবার আগে ভালো বই পড়া বা মজার সিনেমা দেখা ভালো অভ্যাস ধরা হয়।
(৯) ডাবল চিন কমাতে
ডাবল চিন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কি? আরে চিন্তা ছেড়ে হাসুন তো! কারণ হাসিতেই যে এর প্রতিকার! যুক্তরাজ্যের ফেইস ইয়োগা এক্সপার্ট ডেনিয়েল কলিন্স বলেন যে- ‘হাসলে মুখের মাড়ির ২৬টি পেশিরই ভালো ব্যায়াম হয়।’
(১০) ওজন হ্রাস করতে
হাসলে ফুসফুসের আকৃতি বৃদ্ধি পায় । এতে ফুস্ফুস অনেক অক্সিজেন ধারণ করতে পারে। একবার হাসলেও শরীরের ছোটখাটো একটা ব্যায়াম হয়ে যায়। গবেষকদের মতে একবার হাসলে শরীরের ০.০০৩ শতাংশ ক্যালরি খরচ হয়। ফলে হাসিতে কমে ওজন!
আমাদের জীবনে অনেক সমস্যা আছে, থাকবে। তাই বলে হাসতে ভুলে যাবেন না। হাসি ছাড়া একটি দিন হলো মূলত একদিনের অপচয়। হাসতে থাকুন। কারণ, জীবনটা যেমনই হোক, একটাই তো! সুন্দর করে বাঁচাই তাই আমাদের জন্য মুখ্য।
সূত্র- সাজগোজ ডট কম