শীতলক্ষ্যা নদীর একটি বিশাল অংশ দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে বন্দরে সামিট পাওয়ার প্লান্ট ও আলিফ ডকইয়ার্ডের বিরুদ্ধে। উল্লেখিত দুইটি প্রতিষ্ঠান অবৈধ ভাবে নদী দখল করে রাখার কারণে শীতলক্ষ্যা ব্রীজের সামনে যে কোন সময় নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে এসে দেখা যায়, বন্দর থানার ২০নং ওয়ার্ডের মাহমুদনগর এলাকার বাসিন্দা জনৈক মুরাদ মিয়া ক্ষমতা অপব্যবহার করে শীতলক্ষ্যা নদীর বিশাল একটি জায়গা দখল করে আলিফ ডকইয়ার্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছে। ডকইয়ার্ডে স্বাচ্ছন্দ ভাবে কাজ করার জন্য সে শীতলক্ষ্যা ব্রীজের সামনে বিশাল একটি জায়গা দখল করে নৌ-দুর্ঘটনার ফাঁদ তৈরি করেছে । এ ছাড়াও আলিফ ডকইয়ার্ডের পাশে মদনগঞ্জ সামিট পাওয়ার প্লান্ট দীর্ঘ দিন ধরে শীতলক্ষ্যা নদী একটি বিশাল অংশ অবৈধ ভাবে দখল করে সেখানে লোহার জেডি তৈরি করে রেখেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের চরম উদাসিনতার কারণে শীতলক্ষ্যা নদীর বিশাল জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে নিয়েছে বন্দরে ১৯ নং ওয়ার্ডের গড়ে উঠা মদনগঞ্জ বসুন্ধরা ও সামটি পাওয়ার প্লান্ট। এ ছাড়াও একই ভাবে আলিফ ডকইয়ার্ড মালিক মুরাদ মিয়া শীতলক্ষ্যা নদীর অধিকাংশ জায়গা দখল করে রেখেছে। উল্লেখিত তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সামিট পাওয়ার প্লন্ট ও আলিফ ডকইয়ার্ড নদীর অধিকাংশ জায়গা দখল করে রাখার কারণে সেখানে নৌ-দুর্ঘটনার ব্যাপক প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্থানীয়রা। সে সাথে শীতলক্ষ্যা নদীর তলদেশে প্রচুর বালু জমা হওয়ার কারণে নদী তার নব্যতা হারিয়ে ফেলছে। এর কারণে নদী ছোট হয়ে নৌ-দুর্ঘটনার বের যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মদনগঞ্জের বাসিন্দা আলী মিয়া জানান, গত ২০২১ইং সালে ৪ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা ব্রীজের সামনে কার্গো জাহাজের সাথে নারায়ণগঞ্জ টু মন্সিগঞ্জ নৌ রুটের সাবিত আল হাসান নামে একটি লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নারী পুরুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও গত ২০২২ ইং সালের ২১ মার্চ এমভি রুপসী সাথে একই রুটের আরো একটি লঞ্চের দুর্ঘটনায় ১১ জন নারী ও পুরুষ মৃত্যুবরণ করে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক সবুজ শিকদার জানান, নৌ-দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সর্ব প্রথম শীতলক্ষ্যা নদীর ব্রীজের পূর্ব পাশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সে সাথে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাশে ড্রেজিং করে বালু সরাতে পারলে নদী তার আগের রুপে ফিরে যাবে।
এ ব্যাপারে আলিফ ডকইয়ার্ডের মালিক মুরাদ মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থা থেকে শীতলক্ষ্যা নদীকে বাঁচানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।