নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৮জন ইউপি সদস্য চেয়ারম্যান শামসুল আলম সামসুর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ৮জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের স্বাক্ষরিত অভিযোগটি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে দায়ের করেন। এই অভিযোগটি পাওয়ার পরই চেয়ারম্যানকে অনিয়ম ও দূর্নীতিতে সহযোগিতার করার দায়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মাহমুদা খানমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবরও প্রদান করেন।
জানা যায়, উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ১নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ আাব্দুর রহিম, ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ সেলিম মিয়া, ৭নং ওয়ার্ড সদস্য মো. মনিরুজ্জামান মনির, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মিনারা আক্তার, জায়েদা ও নাছিমা আক্তার একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলম সামসুর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির লিখিত চিত্র তুলে ধরে তাদের স্বাক্ষরিত অভিযোগ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেন। তবে অভিযোগ পত্রে এ ইউনিয়নের ৪জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষর করেনি।
অভিযোগে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেন, নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন কাজের বরাদ্দকৃত শতকরা এক শতাংশ টাকা চেয়ারম্যান সঠিকভাবে বন্টন করেননি। তিনি সদস্যদের এ বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করেছেন। এখন পর্যন্ত সরকারী ভাতাও দেয়া হচ্ছে না। টিসিবির পন্য সঠিকভাবে বন্টন করছেন না। এগুলো তার পছন্দের লোকজনকে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও জন্ম নিবন্ধনের জন্য সরকারী ফি ছাড়াও অতিরিক্ত ফি আদায়, ভূয়া ওয়ারিশ সনদ দিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন চেয়ারম্যান সামসুল আলম সামসু।
অভিযোগে তারা আরো উল্লেখ করেন, চেয়ারম্যান সামসু কোন রেজিলেশন না লিখেই সচিবের মাধ্যমে তিনি আগেই স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ৮জন সদস্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগকারী নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ সেলিম মিয়া অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাদের সকল অভিযোগই সত্য। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান পরিষদের ভেতরে তার ব্যক্তিগত লাইসেন্স করা পিস্তল প্রদর্শন করে আমাদেরকে ভয় ভীতি দেখিয়ে ফয়দা লুটেন।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বরাদ্দের টাকা সুসম বন্টন হয়েছে। আমার কাছে সকল প্রমাণের কাগজপত্র রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, সোনারগাঁয়ের নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যেদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের পর তাৎক্ষনিকভাবে ওই পরিষদের সচিবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।