দাঁতের সমস্যায় কম বেশি সবাই ভোগেন। একটু অসতর্ক হলেই দাঁতে না ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে ডেন্টাল ক্যারিজ বা ক্ষয় জটিল সমস্যা। গ্রাম বাংলায় যাকে দাঁতে পোকা বলে অভিহিত করা হয়।
প্রকৃতপক্ষে দাঁতে পোকা বলে কিছুই নেই। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁতের ক্ষয় রোগের জন্য দায়ী।
দাঁতের ক্ষয়রোগের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের দন্ত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী।
সাধারণত যে কোনো ধরনের মিষ্টি খাবার, চিনিযুক্ত খাবার, চকলেট, চুইংগাম, ক্যান্ডি ইত্যাদি খাওয়ার পর মুখে এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি হয়, যা ধীরে ধীরে দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ ‘এনামেল’ ক্ষয় করে থাকে।
যারা এসব খাবার বেশি খায় তাদের ক্ষেত্রে এনামেল ক্ষয় হয়ে দাঁতে ছিদ্র বা গর্ত তৈরি হয়। দাঁতের মধ্যে গর্ত বা ক্যাভিটি হলে তাতে ময়লা ও খাদ্য কণা জমে, ফলে সংক্রমণ হয়। শিশুদের এ গর্ত বা ক্যাভিটি হলে তারা ব্যথায় কষ্ট পায় ও কিছু খেতে গেলেই দাঁত শিরশির করে ওঠে।
ডেন্টাল ক্যারিজ প্রাথমিক অবস্থায় খুবই ছোট কালো গর্তের মতো দেখায়। এ অবস্থায় কোনো ব্যথা বা অসুবিধা না থাকায় রোগীরা, বিশেষ করে শিশুরা বুঝে উঠতে পারে না যে গর্ত তৈরি হচ্ছে। জটিলতা হওয়ার পরই কেবল ধরা পড়ে।
কী করবেন
দাঁতে গর্ত দেখা দেওয়া মাত্র দেরি না করে শূন্য জায়গাটা ভর্তি বা ফিলিং করে নেওয়া উচিত। ডেন্টাল ক্যারিজ যদি ধীরে ধীরে ডেন্টিন থেকে আরও গভীরে অর্থাৎ পাল্প চেম্বার পর্যন্ত চলে যায়, তবে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়। চিকিৎসা ব্যবস্থাও জটিল হয়ে পড়ে।
ভাঙা দাঁতকে আজকাল ফিলিং ম্যাটেরিয়াল বা লাইটকিউর দিয়ে সুন্দরভাবে পূরণ করা যায়, যা দেখতে অবিকল স্বাভাবিক রঙের হয়। রুট ক্যানেল চিকিৎসা করা দাঁতে ক্রাউন বা মুকুট বসাতে দেরি করা উচিত নয়।
ডেন্টাল ক্যারিজ প্রতিরোধে ব্যালেন্সড ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করতে হবে। তাছাড়া এমন টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে যা এনামেল রিপেয়ার করে। চিনিযুক্ত পানীয় বা আঠালো খাবার, অযুক্ত খাবার, কফি ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে বা খাওয়ার পর কুলি করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
শুধু ব্রাশ করলেই হবে না, সুতা বা ফ্লস দিয়ে দাঁতের ফাঁক পরিষ্কার করতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত (বছরে অন্তত দুবার) নিবন্ধিত ডেন্টাল সার্জন দ্বারা দাঁত পরীক্ষা করাতে হবে।