1. meghlatv24@gmail.com : bbcpresss :
  2. jahirulislam.siraj@gmail.com : Jahirul Siraj : Jahirul Siraj
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সোনারগাঁয়ে মাল্টিপাসপাসের ৭ কোটি টাকা নিয়ে তিন পরিচালক উধাও টাকা ফেরত পাওয়ায় দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ পতেঙ্গা এলাকায় এক দোকানীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ক্যাশ থেকে টাকালুট পতেঙ্গায় সিন্ডিকেট ভেঙে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রয় কার্যক্রম শুরু সোনারগাঁয়ে অপ-প্রচার চালানোর প্রতিবাদে হাজী আব্দুল মতিনের সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ বনাম সাউথ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজের ২য় ম্যাচ উপলক্ষ্যে পুলিশের নিরাপত্তা মহড়া চট্টগ্রাম মহানগর বিএন‌পির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এস কে খোদা তোতনকে বহিষ্কার সোনারগাঁয়ে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বস্র বিতরণ বাফুফে নির্বাচনে জয়ী যারা: নতুন প্রেসিডেন্ট তাবিথ আউয়াল,চার সহ- সভাপতি চমকপ্রদ জয় দক্ষিণ হালিশহরে মফিজুর রহমান:সুদ-ঘুষ, জুয়া, মাদক প্রতিরোধে যুবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান সোনারগাঁয়ে পিরোজপুরে অবৈধ গ্যাসের চালিত চুনা ফ্যাক্টরিতে অভিযানে বিচ্ছিন্ন করা হলো গ্যাস সংযোগ

নদী রক্ষায় জাতীয় জাগরণ গড়ে তুলতে হবে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
  • সময়ঃ সোমবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদী রক্ষার কথা শুনতে কেমন যেন বেমানান (!)। তাই এ লেখার শিরোনামও তাই মনে হতে পারে। তবে আসলেই কী শিরোনামটি বেমানান? মোটেও না; বরং যথার্থ। দেশের সিংহভাগ নদী যখন বিপন্ন তালিকাভুক্ত, তখন অনন্য এই প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় আর কী উপায় থাকতে পারে? শেষপর্যন্ত উচ্চ আদালতও এমন নির্দেশনাই দিয়েছেন।

‘দেশের অভ্যন্তরে যাত্রী ও জ্বালানি তেলসহ আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনের স্বার্থে নৌ চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষিতে সেচসুবিধা, প্রাকৃতিক মৎস্যসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি, বন্যা প্রতিরোধ, সবুজ বৃক্ষরাজি রক্ষা এবং সর্বোপরি চলমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন তথা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় নদ-নদীগুলো রক্ষা যে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি আমরা।’

রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের একটি দ্বৈতবেঞ্চ নদী রক্ষায় যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করেছেন। রায়ে নদী দখলকারীদের নির্বাচনে ও ব্যাংকঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তুরাগ নদ রক্ষায় করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন চূড়ান্ত রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে তুরাগকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে দেশের সব নদ-নদী-খালের আইনগত অভিভাবক ঘোষণা এবং সব নদ-নদী-খাল-জলাশয় ও সমুদ্র সৈকতের সুরক্ষায় কমিশন বাধ্য থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

নদী দখলকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কঠিন সাজা ও জরিমানা নির্ধারণ করে অভিযোগ দায়ের, তদন্তের ব্যবস্থা রেখে ২০১৩ সালের নদী রক্ষা আইন সংশোধন করে ৬ মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল এবং নদী রক্ষা কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রায়ের নির্দেশনায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই মাসে একদিন একঘণ্টা করে নদী দূষণের ওপর সচেতনতামূলক পাঠদানের ব্যবস্থা এবং বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের বড়, মাঝারি ও ছোট শিল্পকারখানার শ্রমিকদের অংশগ্রহণে দুই মাসে একদিন একঘণ্টা করে নদীবিষয়ক বৈঠকের নির্দেশ দিয়ে বিষয়টি তদারকির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে বলেছেন আদালত।

এ ছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে তিনমাস পরপর একদিনব্যাপী নদীবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন এবং স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে নদী দখলদারদের নাম প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একইদিন দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ’র প্রধান প্রতিবেদনের শিরোনাম দেয়া হয়েছে ‘হত্যার শিকার নদী’। এর নিচে চারটি পৃথক উপ-শিরোনামে চার জেলার নদীগুলোর করুণ দশা তুলে ধরা হয়েছে; ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে যা রীতিমতো রোমহর্ষক। শিরোনামগুলো হলো-

খুলনা: ‘নদী দখল করে ২৭ ইটভাটা’। রাজবাড়ি: ‘পদ্মাসহ ৫ নদী ধু ধু বালুচর’। মানিকগঞ্জ: ‘ধলেশ্বরীর জীবন নিয়ে শঙ্কা’। ঝালকাঠি: ‘জীবনানন্দের ধানসিঁড়ি এখন মরা খাল’। শিরোনামগুলো শুনলে সচেতন পাঠকদের বুঝতে কষ্ট হবে না যে, আমাদের নদ-নদীগুলোর অবস্থা কতোটা সংকটাপন্ন। একই সঙ্গে এ কথা বলাও প্রয়োজন যে, বিলুপ্ত নদ-নদীসহ প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো উদ্ধার এবং সাবেক অবস্থায় না ফেরাতে পারলে নিকটভবিষ্যতে আমরাও মহাসংকটের মুখোমুখি হবো।

প্রসঙ্গক্রমে একটু পেছনে ফিরে যাই। কয়েকটি বেসরকারি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ২০০০ সালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলন। দেশে প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত (সদ্যসাবেক অর্থমন্ত্রী)। গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমিও অফিসিয়াল এ্যাসাইনমেন্টে ওই অনুষ্ঠানে ছিলাম। সম্মেলনের শেষদিন ‘ঢাকা ঘোষণা’য় প্রধান বিষয়টি ছিল- নদীসহ প্রাকৃতিক জলসম্পদ এবং পাহাড় ও সমতলের সবুজ বৃক্ষরাজিসহ প্রাকৃতিক বনসম্পদ রক্ষা।

স্কুলজীবনে দীনবন্ধু মিত্রর ‘নীল দর্পন’ নাটক পড়েছিলাম। সেখানে একটি বাক্য ছিল- “কাঙালের কথা বাসী হলে ফলে।” আমাদেরও হয়েছে সেই দশা। দু’দশক আগে আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে যে তাগিদ দেয়া হয়েছিল, আমরা তা অনুভব করিনি। এরপর ২০১০ সালে উচ্চ আদালতের দেয়া আরেকটি ঐতিহাসিক রায়ে ক্যাডেস্টারিয়াল সার্ভে (সিএস) ম্যাপ অনুযায়ী ঢাকার চার নদী বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলীকে অবৈধ দখলমুক্ত করে সাবেক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে আদালত সারা দেশের নদ-নদী রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও সরকারকে বলেছিলেন।

রায়ের পর সরকার নড়েচড়েও বসেছিল। গঠন করা হলো ‘নদী রক্ষা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স’; শুরু হলো জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কার্যক্রম। টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্তে কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাঁচ নদীর অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হলো। কিন্তু প্রতিবারই অভিযান শেষে প্রভাবশালী দখলদাররা নদীর বুকে ফের হামলে পড়লেন।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রশাসন (ঢাকা জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকার নদীগুলো রক্ষা করতে ব্যস্ত (?) থাকায় দখলদাররা দেশের অন্যান্য স্থানের নদীগুলো দেদারছে গ্রাস করতে থাকেন। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিভিন্ন জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএর বিভিন্ন নদীবন্দরের কর্মকর্তাদের নির্লিপ্ততার কারণে বহু নদীর সিংহভাগই মারাত্মক দূষিত হয়ে আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে; এককালের খরস্রোতা অনেক নদীর নাম উঠেছে বিপন্ন তালিকায়। সবকিছু দেখেও গত ১০ বছর ঢাল-তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দারের মতো ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকলো জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ।

দেশের অভ্যন্তরে যাত্রী ও জ্বালানি তেলসহ আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনের স্বার্থে নৌ চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষিতে সেচসুবিধা, প্রাকৃতিক মৎস্যসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি, বন্যা প্রতিরোধ, সবুজ বৃক্ষরাজি রক্ষা এবং সর্বোপরি চলমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন তথা বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় নদ-নদীগুলো রক্ষা যে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি আমরা। কিন্তু মুষ্টিমেয় সংখ্যক নদীখেকোসহ এক শ্রেণির সুবিধাভোগী মানুষ নিজেদের স্বার্থে তা বুঝেও জনস্বার্থবিরোধী এ কাজ থেকে বিরত হচ্ছেন না।

নদীর প্রতি মমত্ববোধ সৃষ্টি ও জাতীয় জীবনে নদীর গুরুত্ব উপলব্ধি করাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানাসহ ইউনিয়ন থেকে বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত নদীবিষয়ক কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। উচ্চ আদালতের দেয়া এ নির্দেশনায় নদী রক্ষায় জাতীয় জাগরণ সৃষ্টির বিষয়টির ওপরই সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে নদীখেকোদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ব্যাংকঋণ পেতে অযোগ্য ঘোষণা করে তাদেরকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কটের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রায়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক করার নির্দেশনাও রয়েছে। সুতরাং এসবের মধ্য দিয়ে নদী রক্ষায় নিকটভবিষ্যতে সমাজ ও রাষ্ট্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা করি।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী।

কি!! সবার সাথে শেয়ার করবেন না??

এইরকম আরো খবর
October 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© ২০২১ | বিবিসি প্রেস © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | bbcpress.com