নিজস্বপ্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দুই লেগুনাচালককে ডাকাত আখ্যা দিয়ে আড়াইহাজারের ইলমদী এলাকায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে লেগুনা নিয়ে তারা কারখানার শ্রমিক আনতে আড়াইহাজারের ইলমদী এলাকায় যাওয়ার পর তাদেরকে অপহরণ করে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।
নিহতরা হলেন- সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের বস্তল এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মফিজুল ইসলাম ও একই গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে জহিরুল ইসলাম ওরফে জেসনু। এছাড়াও আড়াইহাজারের হাইজাদী এলাকার সিন্দি মাধবদী গ্রামের নবীর হোসেন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে বস্তল এলাকা থেকে তারা লেগুনা নিয়ে আড়াইহাজার উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের ইলমদী এলাকায় কারখানার শ্রমিক নিয়ে আসার জন্য বের হন। পরে স্বজনরা খবর পান তাদেরকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তল গ্রামে গিয়ে নিহত মফিজুল ও জহিরুল ইসলামের বাড়িতে স্বজনদের মাতম দেখা গেছে। তাদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। মফিজুল ও জহিরুলের মৃত্যুতে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
জহিরুল ইসলামের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, আমার ছেলে ভোর ৪টায় গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার পর আর বাড়ি ফিরেনি। পরে জানতে পারি তাকে ইলমদী এলাকায় মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।
মফিজুলের মা হোসনা বেগম বলেন, ভোর ৪টার দিকে আমার ছেলে গাড়ি চালানোর উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। এরপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ। পরে খবর পেলাম আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। তাকে মিথ্যা অপবাদে হত্যা করা হয়েছে।
আড়াইহাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান জানান, ইলুমদী এলাকায় ডাকাত সন্দেহে তিনজনকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখার খবর শুনে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরও জানান, রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তাদের মরদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের দেহের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম রয়েছে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।