আমিরুল,ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) থেকেঃ
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় শিক্ষক ও অভিবাবকদের যোগসাজসে একই ছাত্রকে দুই স্কুলে ভর্তি দেখিয়ে বছরের পর বছর উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করছে একটি চক্র।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলার ১০৩ নং দক্ষীন শিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সদ্য অবসরে যাওয়া (বর্তমানে পি আর এল) এ থাকা প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান ঐ স্কুলের অভিবাবক কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন গাজী
৫ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের প্রাক প্রাথমিক শ্রেনীতে ভর্তির সরকারি নীতিমালাকে অগ্রাহ্য করে নিজে ঐ স্কুলের সভাপতি হওয়ার জন্য এবং উপভৃত্তির টাকার ভাগ নেয়ার উদ্দেশ্যে পার্শবর্তী এলাকার আব্দুর রহমান ও মনি আক্তারের জমজ মেয়ে সুমাইয়া ও তাহেরাকে (চার বছর বয়সে) ২০২০ সালে প্রাক শ্রেনীতে ভর্তি করে এবং তাদের নামে উপভৃত্তি টাকা তুলতে থকে।
সুমাইয়া ও তাহেরা বাবা আব্দুর রহমান প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী মনি আক্তারকে ভুল বুজিয়ে বেলায়েত হোসেন গাজী এ কাজ করেন। পরের বছর ২০২১ সালে আব্দুর রহমান দেশে এসে ১০৩ নং স্কুল থেকে তার মেয়ে সুমাইয়া ও তাহেরাকে নিয়ে পার্শবর্তী ৩৭ নং পশ্চিম শিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাকে ভর্তি করান এবং প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন গাজীকে বলেন, আমার মেয়েদের এ স্কুলে পড়াবনা, আপনার বিদ্যালয় থেকে আমার মেয়েদের নাম কেটে দিয়েন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বেলায়েত গাজী সুমাইয়া ও তাহেরার নাম ১০৩ নং স্কুল থেকে বাদ না দিয়ে পরবর্তি ক্লাশে তুলতে থাকেন।
বর্তমানে সুমাইয়া ও তাহেরা ১০৩ নং দক্ষীন শিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীর ও ৩৭ নং পশ্চিম শিংহখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেনির ছাত্র , এবং উভয় স্কুল থেকে তাদের নামে উপভৃত্তি আসে।
আরো মজার বিষয় হল সুমাইয়া ও তাহেরা বাবা আব্দুর রহমান ১০৩ নং বিদ্যালয়ের অভিবাবক শ্রেনীর সদস্য। আর এ রকম সাজানো সদস্যদের ভোটে ঐ স্কুল থেকে সদ্য অবসরে যাওয়া (বর্তমানে পি আর এল) এ থাকা প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন গাজী বর্তমান অভিবাবক কমিটির সভাপতি।
এই অনিয়মের বিষয়ে ১০৩ ও ৩৭ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্ত করতে গেলে ১০৩ নং স্কুলের অভিবাবক কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন গাজী ফোন করে তার যেন ক্ষতি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে যানতে চাইলে, বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন খলিফা বলেন, অনিয়মের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলির কাছে জানতে চাইলে তিনি যানান, অর্থনৈতিক অনিয়মের ব্যপারে লিখিত অভিযোগের প্রয়োজন নেই, এ ব্যপারে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।