বন্দরে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা করার জের ধরে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এসআই জুয়েলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ধর্ষিতার পরিবারের ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে বন্দর উপজেলার কেওঢালা এলাকায় এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলো সবুজ (৩৬), উজ্জল (৩৭), সাব্বির (৩২), সাইফুল (২৩) ও শাওন (২৬)। স্থানীয় এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে প্রেরন করেছে।
এ ঘটনায় পুলিশ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার রাতেই বন্দর উপজেলার কেওঢালা পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে লম্পট ধর্ষক মাহবুব হাসান পুস্প(১৮)কে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত লম্পট মাহবুব হাসান পুষ্প উল্লেখিত এলাকার আবুল কালাম মিয়ার ছেলে ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এসআই জুয়েল মিয়ার ভাতিজা বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তারকৃতকে ধর্ষককে সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছে। পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরিক্ষার পর ২২ ধারায় আদালতে প্রেরণ করেছে। এর আগে গত শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বন্দর উপজেলার কেওঢালাস্থ মুসলিমপাড়া এলাকার জনৈক সবির মিয়ার বাড়িতে এ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রীর চাচা সবুজ বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত লম্পট ধর্ষককে আসামী করে বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ২৩(৮)২৩।
ধর্ষণ মামলার বাদী ও ধর্ষিতা স্কুল ছাত্রী চাচা সবুজ মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, আমার ভাতিজি বন্দর উপজেলা মদনপুর ইউনিয়নের বাগদোবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত নাগিনাজোহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত প্রেমের প্রস্তাব সহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে উত্যক্ত করতো কেওঢালা পশ্চিম পাড়া এলাকার আবুল কালাম মিয়ার ছেলে মাহবুব হাসান পুস্প। এর ধারাবাহিকতায় গত শনিবার বিকালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তা আমার ভাতিজিকে তুলে পাশ্ববর্তী মুসলিমপাড়া মোঃ সবির মিয়া বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে পুস্পর ৪ বন্ধুর সহযোগীতায় আমার ভাতিজিকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময়ে তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে ধর্ষক পুস্পসহ তার ৪ বন্ধু কৌশলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজনেরা ভাতিজিকে উদ্ধার করে। তার মূখ থেকে বিস্তারিত জেনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে থানায় মামলা দায়ের করার জের ধরে ধর্ষকের চাচা বন্দর উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা এসআই জুয়েলের নেতৃত্বে প্রায় অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলাপাথারী ভাবে পিটিয়ে আহত করে। ঐ সময় আমার ডাক চিৎকারের শব্দ পেয়ে আমার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা এগিয়ে আসলে তাদেরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আহতদের মধ্যে আমার ভাই উজ্জল ও শাওনের অবস্থা গুরুতর। বর্তমানে আসামি পক্ষের লোকজনের হুমকি ধমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর এইচ এম মাহমুদ জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আসামী পক্ষের লোকজন বাদী পক্ষের লোকজনকে ধাক্কাধাক্কি করেছে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।