বন্দরে আলোচিত মিশুক চালক ফেরদৌস হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তারকৃত ৪ আসামীকে ১ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এদিকে মিশুক চালক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ৪ আসামীর মধ্যে ইব্রাহিম মাঝি (৫০) নামে আরো এক আসামী বিজ্ঞ আদালতে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করে। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টম্বর) সকালে রিমান্ড শেষে গ্রেপ্তারকৃতদের পুনরায় তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করলে ইব্রাহিম মাঝি বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি জবানবন্দি প্রদান করে। আদালতে জবানবন্দী প্রদানকারি ইব্রাহিম মাঝি সুদূর লক্ষীপুর জেলার রায়পুর থানার চর বংশি এলাকার মৃত শামছুল মাঝির ছেলে। যার মামলা নং- ২৪(৯)২২ ধারা- ৩০২/ ৩৪/ ৩৯৪ পেনাল কোড ১৮৬০।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই রবিউল জানিয়েছে, মিশুক চালক ফেরদৌস হত্যা মামলার মাষ্টার মাইন্ড গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি রকিবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফেনী ও রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) মুন্সিগঞ্জ জেলায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকৃত মিশুকটি উদ্ধারসহ প্রথমে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের জহাজরাদী চাঁনপুর এলাকার সাইফুল কাজী ছেলে শিপলু (২১) একই ইউনিয়নের বুরুন্দী বালতি পাড়া এলাকার সামছুদ্দিন মিয়ার ছেলে রাজিব (৩৩)কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। পরে তাদের তথ্যে ভিত্তিতে রোববার রাতে মুুন্সীগঞ্জ সদর থানার কাটাখালী বাজারের মুজিবুর শেখের গ্যারেজ থেকে ছিনতাইকৃত মিশুকটি উদ্ধারসহ মুন্সিগঞ্জ জেলার সাংরন জহাওলাপাড়া এলাকার লাল মিয়ার ছেলে সাইদুল ইসলাম (২৭) ও লক্ষীপুর জেলার রায়পুর থানার চর বংশি এলাকার মৃত শামছুল মাঝির ছেলে ইব্রাহিম মাঝি (৪৩) গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। পরে সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে বিজ্ঞ আদালত ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ঐ দিন বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত ৪ জনের মধ্যে ইব্রাহিম মাঝি মঙ্গলবার সকালে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধী প্রদান করে। বাকিদের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে জীবিকার তাগিদে মিশুক চালক ফেরদৌস মিশুক নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়। ঐ রাতে শিশুক চালক বাসা ফিরে না আসায় মিশুক চালকের দিনমজুর পিতা নজরুল ইসলাম ও মিশুক মালিক মিলে মিশুক চালক ফেরদৌসকে খুঁজতে থাকে। পরে ১২ সেপ্টেম্বর সকালে স্থানীয় এলাকাবাসী বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের দিঘলদী এলাকায় জনৈক মঞ্জু মেম্বারের হাউজিং প্লটের সামনে হাত-পা বাধা ও জবাইকৃত লাশ দেখলে পেয়ে বন্দর থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মিশুক চালক ফেরদৌসের জবাইকৃত লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামী করে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।