নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে বারদী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে ইভটিজিং, ছিনতাই, চুরি ও কিশোরগ্যাং এর মতো ব্যাধি। জানা যায়, বারদী আশ্রমের সামনে ও প্রত্যেকটি অলিগলিতে গড়ে উঠছে কথিত বড় ভাইদের শেল্টারে কিশোরগ্যাং,চুরি, ছিনতাই, মাদক ও ইভটিজিং।
বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ও আশ্রমে আসা দর্শণার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আশ্রম এলাকায় কিশোর গ্যাং এর দৌরাত্ম্য সবচেয়ে বেশি। দিনভর উঠতি বয়সের কিশোর-তরুণরা এখানে ইভটিজিং, মাদক, ছিনতাই এর মতো নানা অপকর্মে জড়িত থাকে। প্রকাশ্যে চলে গাঁজা সেবন, তাদের উৎপাতে এই এলাকায় চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব গ্যাং এর সদস্যরা প্রায়শই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও দর্শণার্থী মেয়েদের ইভটিজিং করে এতে অভিভাবকরা বাঁধা দিলে তাদের উপর চরাও হয়ে আসপাশে থাকা তাদের টং দোকান হতে ছুরি রামদা, চাপাতি নিয়ে হামলা চালিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়।
এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানায়, বাজার হতে একটু সামনে আশ্রম, আশ্রমে এসে দর্শণার্থীরা শপিং করতে গেলে বখাটেরা তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনতাই করেন।
এই জায়গা গুলিতে এরা প্রতি দলে ৮ থেকে১০ জন থাকে। তারা কোন মহিলা একা বা তার ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে এই জায়গা গুলি দিয়ে যাওয়ার সময় ঐ ছিনতাইকারীরা মহিলার আগে পিছে পাশে গা ঘেষে হাটতে থাকে। এই সময় সামনের একজন চোর হঠাৎ দাড়িয়ে যায়, সামনে থাকা নিজ দলের চোরের সাথে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ধাক্কা খায়। পেছনের মহিলা এবং তার সাথে বাচ্চা বা পুরুষ ও হঠাৎ থমকে দাড়িয়ে যায়, তাদের মনোযোগ থাকে সামনের লোকটির উপর যে হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে দাড়িয়ে গেছে। এই সুযোগে মহিলার কাধে ঝুলানো ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোবাইল বা টাকা চোখের পলকে পেছনে থাকা ছিনতাইকারী চেইনখুলে নিয়ে যায়। যা আশে পাশে কেউ দেখতে পায়না। কারণ আশেপাশে যারাই থাকে তারা মোবাইল চোরের সদস্যরা। তারা দূর থেকে আসায় এ বিষয়ে থানায় কোন অভিযোগ দায়েরও করেন না। হতাশ হয়ে চলে যান বাড়িতে।
এ ছাড়াও ছোট ছোট টোকাইরা ২ বা ৩ জন মহিলাদের এই সব উল্লেখিত জায়গায় হাতে পায়ে ধরে পয়সার জন্য টানাটানি করে বিব্রত করে সব মনোযোগ তখন থাকে কি করে টোকাইদের থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই সুযোগে মোবাইল চোরারা তাদের অপারেশন চালায়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে লাঙ্গলবন্দ স্নান করে বারদী আশ্রমে প্রার্থনা করতে আসে ধামরাই থেকে আসা শীলা রানী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি আমার স্বামী সন্তান নিয়ে প্রথমে লাঙ্গলবন্দ স্নান করে এসে বারদী লোকনাথ বাবার আশ্রমে প্রার্থনা করতে আসি , অনেক ভিড়ের মধ্যে আমার গলার স্বর্নের চেইন ও মোবাইল ছিনতাই হয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুজির পরে সেটি আর খুঁজে পাইনি।
ফুটপাত দোকানে থেকে এটা সেটা কিনতে গিয়ে মহিলারা মনোযোগ হারিয়ে ফেলে নিজের ব্যাগের প্রতি ঐ সুযোগে ফুটপাতে গড়ে ওঠা দোকানদারের সহায়তায় মোবাইল চোরেরা তাদের অপারেশন চালায়। ছিনতাই নিয়ে জনজীবন সঙ্কিত হয়ে আছে,জনগনের শেষ ভরসা এখন প্রশাসন এর উপর।এবিষয়ে তারা স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, বারদী আশ্রমে আগত কোন ভুক্তভোগী আমাদের কাছে কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।